• We kindly request chatzozo forum members to follow forum rules to avoid getting a temporary suspension. Do not use non-English languages in the International Sex Chat Discussion section. This section is mainly created for everyone who uses English as their communication language.

গল্প

Baron1991

Active Ranker
Chat Pro User
Chat Moderator
আজকে যে ঘটনাটি জানাতে চলেছি, সেই সম্পর্কে আমি নিজে এখনো প্রচুর কাহিনী শুনে থাকা সত্ত্বেও নিজে কিন্তু সেই এলাকায় বারংবার ঘুরেও এমন কোনো ভয়ানক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হইনি। এমন কি রাত দুটোর সময়েও আমি ও আমার স্ত্রী সেই নিশ্চিন্দ্র বিরাট জঙ্গলের সুদীর্ঘ নিশ্চল নিশ্চুপ পথে গাড়ি নিয়ে দুই-তিন পাক দিয়েও কোনো অশৈলী ঘটনার সাক্ষী থাকতে পারিনি। হ্যাঁ,আজ আমি আমাদের উত্তরের ডুয়ার্সের গরুমারা অভয়ারণ্যের কথাই বলছি! এই অভয়ারণ্য এবং এর গা ঘেঁষা টিয়াবন এবং লাটাগুড়ি নিয়ে প্রচুর জনশ্রুতি প্রচলিত আছে। সেই কলেজ জীবন থেকে এসব নিয়ে প্রচুর গল্প শুনে এসেছি। সেই আমলে বেশ কিছু পোড়ো বাড়ি এবং অভিশপ্ত জায়গাতে আমাদের দু-চারজন বন্ধুর ভূত খোঁজার অভিসার চলতো প্রায়ই। কিন্তু কোনোদিন কোনো প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা হয়নি সেসব জায়গায়। কিন্তু লাটাগুড়ি ফরেষ্টের ভেতরকার প্রচুর গল্প তখনো শুনতাম, এমনকি এখনো শুনি। সেখানে বিশেষ করে টিয়াবন আর বীচাভাঙা লেভেল ক্রসিং এই দুই জায়গা নিয়ে সব চাইতে বেশী ঘটনার উল্লেখ মেলে। একজন সুশ্রী যুবতী নাকি মোটরবাইকে কোনো আরোহীকে একা পেলে তার কাছ থেকে লিফট চান এবং প্রায় সব ক্ষেত্রেই শোনা গেছে বেশীরভাগ আরোহীই নাকি লিফট দিয়েছেন, কেন দিয়েছেন বা দেন সেই যুক্তি আমার কাছে নেই,তবে সব পুরুষের কাছেই উপযাচক হয়ে কোনো মহিলার, বিশেষ করে সেই মহিলা যদি সুন্দরী হন, লিফট চাওয়াটা হয়তো বিশেষ প্রাপ্তি হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে অথবা সেই মহিলার মধ্যে হয়তো এমন কোনো সম্মোহনী শক্তি আছে যে কেউ তাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারেন না! তো সেই কারনেই হয়তো তিনি লিফট পেতেন।শুনেছি কিছু ক্ষেত্রে কিছুক্ষন পথ চলার পরে কোনো কারনে কেউ লুকিং গ্লাস দিয়ে দেখেছে পেছনে কেউ নেই,আবার কেউ গন্তব্যে পৌঁছে বাইক থামিয়ে দেখেছে পেছনে কেউ নেই আবার অনেকে নাকি গল্প করতে করতে বা কথা বলতে বলতে হঠাৎ পেছনে তাকিয়ে দেখেছে পেছন পুরো ভোঁ-ভাঁ! প্রত্যাশিতভাবে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই এ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে বা অনেকে জ্ঞানও হারিয়েছেন শোনা যায়।
আমি এই কাহিনীর প্রামান্য হিসেবে দুজন প্রত্যক্ষদর্শী বা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাকারীর খোঁজ পেয়েছিলাম।
প্রথমজনের খোঁজ পাই লাটাগুড়ির বিখ্যাত মা মিষ্টান্ন ভান্ডারে। এই মা মিষ্টান্ন ভান্ডারে লাটাগুড়ি ঢোকার মুখে বা লাটাগুড়ি থেকে ফেরার পথে ঢুঁ মারবেন না এরকম ব্যক্তি কালভদ্রে দু-একজন পেলেও পাওয়া যেতে পারে। সেই দোকানে পুরী,সিঙারা,মিষ্টির রকমারি পসরা ছাড়াও আছে বিখ্যাত মালাই চমচম আর পাঁচ টাকা থেকে পাঁচশো টাকা অবধি সাইজের পেল্লায় চমচম। আর তার পাশেই লাগোয়া বিখ্যাত কাজলদার দোকান। কাজলদার দোকান নিতান্তই সাদামাটা পান,সিগারেট,চিপস,কোল্ড ড্রিংক্সের দোকান। কিন্তু বিখ্যাত কেন? সেই প্রসঙ্গে ঢুকছি না। কিন্তু এই মা মিষ্টান্ন ভান্ডারের ছোট ভাই আর কাজলদা দুজনের সাথেই আছে আমার অবিচ্ছিন্ন বন্ধুত্ব! এতবার এতদিন কারনে অকারনে এতোবার গিয়েছি আমার প্রিয় লাটাগুড়িতে যে,অনেকের সাথেই গড়ে উঠেছে এক অবিচ্ছেদ্দ সম্পর্ক।সেরকম সেদিনও সন্ধ্যে নামার পর ফিরছিলাম জঙ্গলের বুক চিরে। চিরদিনের অভ্যেসমতো মহাকাল পেরিয়ে বাইক দাঁড় করালাম রাস্তার ধার ঘেঁষে। স্টার্ট বন্ধ করে বেশ কিছুক্ষণ ফিল করলাম জঙ্গলের গন্ধ, মজা নিলাম দুষ্টু বাঁদরগুলোর বাঁদরামিতে আর আমার সব চাইতে প্রিয় ঝিঁ ঝিঁ পোকার সমস্বরে ঠনঠন ঠনঠন আওয়াজের। স্তব্ধ জঙ্গলের এই ক্রমাগত আওয়াজ শুনলে আমার কেন জানি মনে হয় গহীন অরণ্যের ভেতরের কোনো গোপন কোনে কোনো মন্দিরে হয়তো পূজো-পাঠ চলছে। মনে হয় এই বোধ হয় এক্ষনি জঙ্গলের বুক চিরে বেরিয়ে আসবেন দেবী চৌধুরাণী এবং ভবাণী পাঠক! অদ্ভুত এবং আশ্চর্য লয়ে চলে এই আওয়াজ। আমি কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে তারপরে মা মিষ্টান্ন ভান্ডারে এসে চা-য়ের অর্ডার দিয়ে কাজলদার সাথে দেখা করে এসে চা আর গরম গরম সিঙারা নিয়ে বসলাম। দৈবাৎ আমার সাথে আলাপ জুড়লেন আমার উল্টোদিকে বসে থাকা এক দম্পতি।
আমার ঘাড়ে ঝোলানো কদাকার এবং বিরাট ক্যামেরার ব্যাগই হয়তো ওঁনাদের মনে উৎসাহের উদ্রেক করে থাকবে! কথায় কথায় শুনলাম উনি বিজ্ঞানের শিক্ষক,বাড়ি কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধায়, কর্মসূত্রে চালসায় থাকেন। গল্পে-গল্পে উনিও সেদিন শুনিয়েছিলেন ওঁনার জীবনের এক গল্প।

চাকরীতে জয়েন করার মাস কতক পরে উনি একবার বাড়ি থেকে ছুটি কাটিয়ে চালসায় ফিরছিলেন নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে। তখন সন্ধ্যা গড়িয়ে গেছে। মহাকাল পার হওয়ার কিছুক্ষন বাদেই দেখতে পান রাস্তার ধার ঘেঁষে এক মহিলা লিফট চাইছেন। কিছুটা এগিয়েই তিনি ব্রেক কষেন এবং লিফট দেওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়ি ব্যাক গিয়ারে নেন।কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে আর কাউকেই দেখতে পান না। তিনি নিজেও অত্যন্ত অবাক হয়ে যান এবং মিনিটখানেক এদিক-ওদিক খুঁজেও কোনো সুরাহা না করতে পেরে আবার গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে যান।
তিনি যখন বড়দিঘীর কাছাকাছি পৌঁছেছেন হঠাৎ দেখলেন চলন্ত বন্ধ গাড়ির ভেতরে সামনের সিটে ওঁনার পাশে সেই মহিলা বসে আছেন। উনি হতচকিত হয়ে গিয়ে কড়া ব্রেক কষেন কিন্তু আর কিছুই দেখতে পান না। তার পরেও বহুবার উনি অনেকবার এই পথে নিয়মিত যাতায়াত করেছেন এবং করেন কিন্তু কোনোদিনও আর সেই মহিলাকে দেখেন নি। আমার সাথে আজও সেই ভদ্রলোকের যোগাযোগ রয়েছে, আজও তিনি সেই রহস্যের খোঁজে রয়েছেন কিন্তু সফল হননি।

আমার দ্বিতীয় ঘটনা যাঁকে নিয়ে তিনি জলপাইগুড়ির একজন প্রিয় এবং একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নেতা ছিলেন। সবার প্রিয় এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এই মানুষটি আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। দ্বিতীয় ঘটনা এই মানুষটিকে কেন্দ্র করেই। তাঁর মুখ থেকেই শোনা। ওঁনার নাম আর নিচ্ছি না অনেক কারনে। সেবার বর্ষাকালের এক দিনে স্থানীয় কদমতলার পার্টি অফিসে মিটিং শেষে ওঁনাকে যেতে হবে মালবাজারে। সেখানে বিশেষ জরুরী একটি বৈঠক ছিল। কিন্তু এখানকার মিটিং সারতে সারতেই বেজে গেল সন্ধ্যে ছ'টা। ঘন ঘোর দূর্যোগ,সাথে জলপাইগুড়ির কুখ্যাত বৃষ্টি আর অন্ধকার হয়ে আসা আবহাওয়া। সবাই যখন নিরালা হোটেল আর আধুনিকার মোড়ে এসে দাঁড়ালো,অনেকেই নিষেধ করেছিলো এই দিনে আর মালবাজার না যাওয়ার জন্য। কিন্তু দলের জরুরী বৈঠক,সবাই ওঁনার জন্য অপেক্ষা করবেন আর উনি যাবেন না,তাই কি হয়? তাই সবার আপত্তি অগ্রাহ্য করে বিশ্বস্ত এবং প্রবীণ ড্রাইভারকে নিয়ে তিনি রওনা দিলেন। তিস্তা সেতু পেরোতে না পেরোতেই বাড়লো বৃষ্টির বেগ আর সাথে তুমুল ঝোড়ো হাওয়া। ওয়াইপার চালিয়েও বাগ মানানো যাচ্ছিল না বৃষ্টির তোড়কে। দোমহনী দিয়ে ঢুকে বীচাভাঙা লেভেলে ক্রসিং পৌঁছতে পৌঁছতে চারদিকে গাঢ় অন্ধকার। হঠাৎ হেডলাইটের আলোয় দেখলেন মাঝ রাস্তায় দাঁড়ানো এক নারীমূর্তি! তার দু-হাত দু-পাশে প্রসারিত। চুল খোলা,পরনে সাদা শাড়ি। সে যেন দুহাত দুপাশে বাড়িয়ে আটকে দিতে চাইছে এদের পথ। সাহসী ড্রাইভার শুধু বলেছিল,দাদা,আপনি চোখ বুঁজে থাকুন,তাকাবেন না। কিন্তু উনি চোখ বুঁজতে পারেন নি, বরং পাথরবৎ হয়ে দেখলেন ওঁনাদের গাড়ি সেই নারীমূর্তির শরীর ভেদ করে পার হয়ে গেল মালবাজার অভিমুখে। সারা শরীরে অনুভূত হল এক সুতীব্র ঠান্ডা অনুভূতি। তবে সেটা ভয়ে না অন্য কোনো কারনে সেটা তিনি নিজেও বোঝেন নি। তবে পরে তিনি ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে জেনেছিলেন যে,ওই এলাকার এসব কারবার সম্পর্কে অনেক পুরোনো ড্রাইভারই নাকি ওয়াকিবহাল। তবে কোনো ক্ষেত্রেই দাঁড়ানো,লিফট দেওয়া বা পেছন ঘুরে আবার দেখার চেষ্টা করা যুক্তিযুক্ত নয়।

জানি না আদৌ এসব ঘটনা সত্যি কিনা,কারন এসব কোনোটাই আমার সাথে ঘটে নি। কিন্তু যাঁদের মুখ থেকে আমি এই দুটো ঘটনা শুনেছিলাম তাঁরা কেউই চপলমতি বা ফালতু কথা বলার মানুষ নন। বাকীটা বিচার করবেন পাঠক।

✍️ সংগৃহীত
 
Top