তখন ব্যাঙ্গালুরু যাচ্ছি ট্রেনে। দুই রাতের সফর। আমি তো আজীবন “সাইড আপার সিংহাসন”-এর রাজা। ট্রেন ছাড়লেই বই হাতে সোজা উপরেই গুম।
কিন্তু সেদিন ভাগ্যদেবী বললেন, “নাহ!” পেলাম সাইড লোয়ার। অগত্যা প্রজা হয়ে বসতে হল।
পরের দিন ঘুম ভাঙল,
“ব্রেড-পাকোড়া!”
“উপমা-বড়া!”
এইসব চিৎকার-চেঁচামেচি আর সম্বার-করিপাতার ধোঁয়াটে গন্ধে। বুঝলাম , বাংলার সীমা ছাড়িয়ে অনেক দূরে এসেছি। মুখ ধুয়ে চা হাতে সিটে বসলাম। বিশাখাপট্টনম ঢুকছে। ট্রেন আধঘণ্টা লেট।
ভাবলাম একটু নেমে হাত-পা ছাড়িয়ে আসি। স্টেশন থেকে পুরি-সবজি নিয়ে সিটে ফিরছি , এবং তখনই বিপদ! এক ভদ্রলোক আমার সিট দখল করে মহাভারত সমাপ্ত ভঙ্গিতে বসে আছেন।
ইয়া বড় গোঁফ, চোখে চশমা, মাথায় তেল, মুখে আট গাল হাসি।
আমি বললাম,
“ইয়ে মেরি সিট হ্যায়।”
তিনি আমাকে চেয়ে রইলেন যেন আমি চাঁদ থেকে নেমেছি, তারপর আবার হেসে উঠলেন। সমস্যা বাড়ল।
চেষ্টা করলাম ইংরেজিতে
“Sir, this is my seat.”
তারপর তিনি এমন এক অজানা ভাষায় কীসব বললেন যেন স্টার ওয়ার্সের এলিয়েনরা আমার সঙ্গে কথা বলছে। শেষে হাত নেড়ে আমাকে ইশারা করলেন , মানে আমাকেই আমার সিটে বসতে বলছেন।
বুঝলাম—আজ কেস খাওয়া ফাইনাল।
আমি জোর দিয়ে বললাম,
“Its my reserved seat.”
তিনি আবারও হাসলেন এবং শুধু দুটো শব্দ আমার কানে এসে ধাক্কা খেল “Adjust মারি।”
মারি? কাকে মারি? Adjust করব নাকি ওকেই লাফেটাফে ছুঁড়ে ফেলব—মনেই মনেই মহাসমস্যা।
যাই হোক, চিপে-চুপে পুরি-সবজি খেয়ে হাত ধুতে গেলাম। ফিরেই দেখি লোকটা আধশোয়া! আমার মাথা চটকে ঘোল বানিয়ে রেখেছে।
বললাম, “Get up, please sit somewhere else.”
ঠিক তখনই উপরের বার্থ থেকে এক বাঙালি ভাই এমনভাবে মুখ বের করলেন যেন গর্ত থেকে সাপ উঁকি দিচ্ছে
“আহারে, উনি তো একটু বসতে চাইছেন। দিন না দাদা!”
আমি বললাম,
“ঠিক আছে দাদা, আপনার উপরেই তাকে তুলে দিচ্ছি। আপনি বসান।”
শুনেই উনি সাদা চাদরের নিচে এমন গতিতে ঢুকে গেলেন , মনে হল গোঁফটাও টানলে বের হবে না।
টিটির অপেক্ষায় রইলাম। ঘণ্টাখানেক পরে তিনি এলেন। কথা বলতে যাব দেখি ও ভদ্রলোক আর টিটি দুজনেই শুরু করলেন তাঁদের ভাষায় ‘চরং-মরাং’ বাক্যালাপ। টিটি আবার কাঁদো-কাঁদো মুখে কিছু বলছে! যেন আমাকে সিট দেওয়া মানে ওনার চাকরি চলে যাবে।
আমি ঠান্ডা মাথায় ভাবলাম , এখন না হলে কখনই না।
সরাসরি ভদ্রলোকের সুটকেসটা দরাম করে নামিয়ে দিলাম। তারপর নিজের সিটে লম্বালম্বি শুয়ে পড়লাম যেন আমি ট্রমা সেন্টারের ‘ক্রিটিক্যাল পেশেন্ট’।
দুজনে এমন চোখে তাকাল যেন আমি শাশুড়ির জগৎ ভরমের কাঁসি ভেঙে ফেলেছি।
আমি টিকিট দেখিয়ে বললাম,
“My leg is injured. I will not allow anyone on my seat. That’s why I booked side lower.”
টিটি মুখ বেকে বললেন, “Ok.”
ব্যাস , এটাই আমার বিজয়ের শঙ্খধ্বনি।
রাহু কেতু দুজনেই বকবক করতে করতে সরে
গেল।
কিন্তু সেদিন ভাগ্যদেবী বললেন, “নাহ!” পেলাম সাইড লোয়ার। অগত্যা প্রজা হয়ে বসতে হল।
পরের দিন ঘুম ভাঙল,
“ব্রেড-পাকোড়া!”
“উপমা-বড়া!”
এইসব চিৎকার-চেঁচামেচি আর সম্বার-করিপাতার ধোঁয়াটে গন্ধে। বুঝলাম , বাংলার সীমা ছাড়িয়ে অনেক দূরে এসেছি। মুখ ধুয়ে চা হাতে সিটে বসলাম। বিশাখাপট্টনম ঢুকছে। ট্রেন আধঘণ্টা লেট।
ভাবলাম একটু নেমে হাত-পা ছাড়িয়ে আসি। স্টেশন থেকে পুরি-সবজি নিয়ে সিটে ফিরছি , এবং তখনই বিপদ! এক ভদ্রলোক আমার সিট দখল করে মহাভারত সমাপ্ত ভঙ্গিতে বসে আছেন।
ইয়া বড় গোঁফ, চোখে চশমা, মাথায় তেল, মুখে আট গাল হাসি।
আমি বললাম,
“ইয়ে মেরি সিট হ্যায়।”
তিনি আমাকে চেয়ে রইলেন যেন আমি চাঁদ থেকে নেমেছি, তারপর আবার হেসে উঠলেন। সমস্যা বাড়ল।
চেষ্টা করলাম ইংরেজিতে
“Sir, this is my seat.”
তারপর তিনি এমন এক অজানা ভাষায় কীসব বললেন যেন স্টার ওয়ার্সের এলিয়েনরা আমার সঙ্গে কথা বলছে। শেষে হাত নেড়ে আমাকে ইশারা করলেন , মানে আমাকেই আমার সিটে বসতে বলছেন।
বুঝলাম—আজ কেস খাওয়া ফাইনাল।
আমি জোর দিয়ে বললাম,
“Its my reserved seat.”
তিনি আবারও হাসলেন এবং শুধু দুটো শব্দ আমার কানে এসে ধাক্কা খেল “Adjust মারি।”
মারি? কাকে মারি? Adjust করব নাকি ওকেই লাফেটাফে ছুঁড়ে ফেলব—মনেই মনেই মহাসমস্যা।
যাই হোক, চিপে-চুপে পুরি-সবজি খেয়ে হাত ধুতে গেলাম। ফিরেই দেখি লোকটা আধশোয়া! আমার মাথা চটকে ঘোল বানিয়ে রেখেছে।
বললাম, “Get up, please sit somewhere else.”
ঠিক তখনই উপরের বার্থ থেকে এক বাঙালি ভাই এমনভাবে মুখ বের করলেন যেন গর্ত থেকে সাপ উঁকি দিচ্ছে
“আহারে, উনি তো একটু বসতে চাইছেন। দিন না দাদা!”
আমি বললাম,
“ঠিক আছে দাদা, আপনার উপরেই তাকে তুলে দিচ্ছি। আপনি বসান।”
শুনেই উনি সাদা চাদরের নিচে এমন গতিতে ঢুকে গেলেন , মনে হল গোঁফটাও টানলে বের হবে না।
টিটির অপেক্ষায় রইলাম। ঘণ্টাখানেক পরে তিনি এলেন। কথা বলতে যাব দেখি ও ভদ্রলোক আর টিটি দুজনেই শুরু করলেন তাঁদের ভাষায় ‘চরং-মরাং’ বাক্যালাপ। টিটি আবার কাঁদো-কাঁদো মুখে কিছু বলছে! যেন আমাকে সিট দেওয়া মানে ওনার চাকরি চলে যাবে।
আমি ঠান্ডা মাথায় ভাবলাম , এখন না হলে কখনই না।
সরাসরি ভদ্রলোকের সুটকেসটা দরাম করে নামিয়ে দিলাম। তারপর নিজের সিটে লম্বালম্বি শুয়ে পড়লাম যেন আমি ট্রমা সেন্টারের ‘ক্রিটিক্যাল পেশেন্ট’।
দুজনে এমন চোখে তাকাল যেন আমি শাশুড়ির জগৎ ভরমের কাঁসি ভেঙে ফেলেছি।
আমি টিকিট দেখিয়ে বললাম,
“My leg is injured. I will not allow anyone on my seat. That’s why I booked side lower.”
টিটি মুখ বেকে বললেন, “Ok.”
ব্যাস , এটাই আমার বিজয়ের শঙ্খধ্বনি।
রাহু কেতু দুজনেই বকবক করতে করতে সরে
গেল।




