
- তুই আমাকে ঠকাচ্ছিস বল?
- কিসব বলছিস?
- তুই আরেকটি মেয়ের সাথে ফ্লার্ট করছিস ?
- কার সাথে কি করেছি?
- তোর ফোনটা দে..
- এই নে।
- ডিলিট করে দিয়েছিস?
- এত সন্দেহ ভালো না।
- সন্দেহটা তুই তৈরি করেছিস
- কি বলতে চাইছিস ক্লিয়ার করে বল
- ওকে, আমার ফোন থেকে দেখাচ্ছি (অনু নিজের ফোন থেকে কিছু স্ক্রিনশট দেখায়) ।
- এগুলো ভুল।
- তোর নম্বর থেকে চ্যাট দেখাচ্ছে তো...
- তুই ভুল বুঝছিস আমায়, আগে সবটা শোন আমার থেকে..
- আমি কিছু শুনতে চাই না তোর থেকে আমি, তোকে খুব বেশি বিশ্বাস করতাম আর তুই আমার সাথে এমনটা করতে পারলি?
- দেখ অনু তুই আগে সবটা শোন তারপর দোষ দিস।
- আমি আর কিছু শুনতে চাই না।
- প্লীজ একটু শোন..
- না, আমি তোকে সবকিছু দিয়ে ভালোবাসি তবু তুই আরেকটা মেয়ের সাথে এইসব চ্যাট করিস।
- আমি এমন কিছুই করি নি
- চুপ কর, এই প্রমাণ মিথ্যে?
- হ্যাঁ মিথ্যে, আমি এমন কিছুই করিনি।
- আমি তোকে বিশ্বাস করি না আর।
- অনু এটা পুরো মিথ্যে আমি মেয়েটাকে চিনিও না, একটা ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট আসে ফেসবুকে, আমি একসেপ্ট করিনি অচেনা বলে, তারপর মেসেঞ্জারে কল করে, মেসেজ করে আমি পরিচয় জানতে চাইলে বললো আমার লেখার একজন পাঠিকা, তারপর ঐ একটু আধটু কথা, তারপর হোয়াটসঅ্যাপে একটু কথা বার্তা এর বেশি কিছুই করিনি আমি।
- চুপ...আমি তোর কথা আমি আর বিশ্বাস করছি না, আর তোর যেমন ইচ্ছে যার সাথে ইচ্ছে থাক, আমি এই সম্পর্কটা আজই শেষ করছি..
- অনু এমনটা করিস না, আমি সত্যি তোকে খুব ভালোবাসি।
- তোর মুখে আর ভালোবাসার কথা মানায় না, তোর কাছে আমার লাস্ট একটা জিনিষ চাওয়ার আছে দিবি?
- বল কি চাস?
- আজ থেকে আর কখনো আমায় ডিস্টার্ব করতে সামনে আসবি না..
- ওকে তুই যখন এত কিছুর পরও এটাই চাস তো আমি তোকে সত্যি আর কখনও ডিস্টার্ব করবো না, ভালো থাকিস...
এইভাবেই অনু আর রাজার সম্পর্কটা শেষ হয়ে যায় নিছক একটা তৃতীয় ব্যাক্তির অস্তিত্বে, বিশ্বাস আর ভালোবাসা হেরে যায় একজনের অভিনয়ে। এরপর প্রায় এক বছর পর এক বৃষ্টির দিনে বাসস্টপে দেখা আবারও দুইজনের। অনুই আগে দেখে রাজাকে। মানুষটার একমুখ দাঁড়ি গোঁফ, চোখে একটা চশমা চেপেছে, চুলগুলো এলোমেলো। কি মনে হলো অনু নিজেই আগে কথা বললো
- কেমন আছিস ?
- ওহ তুই, খেয়াল করিনি রে।
- হম সে তো দেখলাম।
- আমার চলে হচ্ছে, তুই কেমন আছিস বল?
- ভালো..
- তারপর কোথায় গেছিলি?
- কলেজে, একটা প্রোগ্রাম ছিলো, তুই?
- একটা লেখালিখির অফিসে কাজ করি।
- ওহ ভালো, তারপর বাকি সব কেমন আছে?
- বাড়ির সবাই ভালো আছে।
- আর বাড়ির বাইরের লোক?
- এমন কিছুই নেই।
- তাই?
- হম, কিন্তু আমি জানি আজও তুই আমাকে বিশ্বাস করবি না..
- সে তো তুই নিজেই বিশ্বাসের জায়গাটা ভেঙেছিস।
- আমি আজও বলবো তুই ভুল বুঝেছিলিস আমায়, খোঁজ নিলে হয়তো সবটাই পরিষ্কার হতো।
- ছাড় ওসব বলে আর কি হবে?
- সেই আজ আমি তোর কাছে অতীত, ভেবে কি হবে, কিন্তু তুই আমার কাছে বর্তমানই আছিস।
- কেনো তবে এমনটা করলি?
- আমি কিছুই করিনি সেদিনও, আজও একটা মিথ্যে নিয়ে বেড়াচ্ছি। যদি সত্যি আমি ভুল হতাম, তবে আজও তোকে ভালবাসতাম না। তোর কথায় তোকে ডিস্টার্ব করতে ছেড়ে দিতাম না ( বলতে বলতে রাজা কেঁদে ফেলে)...
অনুর মনটা একটু নরম হয় এটা দেখে যে একটা ছেলে তার জন্য কাঁদছে, যদি সত্যি সে দোষী হতো তবে তো সে একজনকে পেতে এতটা ভেঙে পড়ত না, তবে কি সে ভুল ছিল? তার ভাবনা মিথ্যে অভিনয়ে ভুল করে রাজাকে কষ্ট দিয়েছে?
- থাম কাঁদিস না।
- আমি তোকে খুব ভালোবাসি রে অনু।
- আমিও তোকে ভালবাসি, আর তাই আমার মনে হচ্ছে ভুলটা আমারই ছিল, পারলে ক্ষমা করিস
- না রে, তুই তো একজনের কথায় আমায় ভুল বুঝেছিলি এতে তোর দোষ নেই।।
- তবু একবার যাচাই করলে এতগুলো দিন আমাদের নষ্ট হতো না।
- ছাড় এসব তুই যে ফিরে এসেছিস এটাই আমার কাছে অনেক, আবার শুরু করি তবে পথচলা একসাথে?
- হম চল....
বৃষ্টি থেমে গেছে, শান্ত পরিবেশে দুটো মানুষ পথ চলতে শুরু করল নতুন ভাবে বিশ্বাসে আর ভালোবাসায়। আসলে ভালোবাসাটা খাঁটি হলে বিশ্বাস ফিরবেই আর তার সাথে পূর্ণতা পাবেই ভালোবাসাটা।
---------- সমাপ্ত ---------

_________সংগৃহীত